মোট পৃষ্ঠাদর্শন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১২

আজকে একাত্তর

আজো আমি স্বপ্ন দেখি যা দেখতাম একাত্তরে,
আজো আমি পদ্য লেখি যা লিখতাম একাত্তরে,

আজো আমি অল্প বুঝি যেমন ছিলাম একাত্তরে,
আজো আমি অল্পে খুশি যেমন হতাম একাত্তরে,

আজো আমার দুঃখ আছে যেমন ছিল একাত্তরে,
আজো আমার স্বপ্নরা সব আটকে আছে একাত্তরে,

আজো আমি মিছিলে যাই, যেমন যেতাম একাত্তরে,
শিক্ষাপীঠে আজো আমার স্যারের গায়ের রক্তঝরে;

আজো আমি দোষ না করার ভীষন দোষের অপরাধি,
আজো আমি জখম হয়ে হাসপাতালে একলা কাঁদি;

আজো আমি ফেরারি আছি, যেমন ছিলাম একাত্তরে,
আমার নামে আগরতলা আজো লেখা হয় কারাগারে।

আজো ওরা শাসক হবার পূন্যসুখে উর্ধ্বে থাকে,
আজো ওরা আসন ধরে জোঁকের মতন আটকে থাকে;

আজো আমি সুশাসনের মত্ত আশায় অন্ধ আছি,
আজো আমি ন্যায়-অন্যায় বোধের ভেতর দ্বন্দ্বে আছি,

মায়ের চোখে পানি আজো, যেমন ছিল একাত্তরে,
ফেলানী নামে ভাগ্য আজো, আটকে আছে কাঁটাতারে।

আজো আমি স্বপ্ন দেখি যা দেখতাম একাত্তরে
আজো আমি পদ্য লেখি যা লিখতাম একাত্তরে

আজো আমি অল্প বুঝি যেমন ছিলাম একাত্তরে
আজো আমি অল্পে খুশি যেমন হতাম একাত্তরে

আজো আমার দুঃখ আছে, যেমন ছিল একাত্তরে...
আজো আমার স্বপ্নগুলো আটকে আছে একাত্তরে।

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১২

স্বাধীনতা

'নতুন করে আর কি লিখব?যখন বহু আগেই রক্ত ঢেলে লিখে এনেছি তোমায় -‘স্বাধীনতা’
নতুন করে আর কি বলব? যখন গানের ভাষায় কবিতায় হয়ে গেছে সব কথা সব আলাপণ।
নতুন কিই বা শিখব আর! যখন ৪০ টি বছর ধরে, বুহু অলিগলি ঘুরে সব কিছুই হয়ে গেছে শেখা
আজ নতুন কিছুই দেখতে পাই না তাই। কারণ আমার ঘরে আজ আলো নেই।
সামনে আজ শুধুই শুণ্যতা,সীমাহীন অন্ধকার।
যখন মনের কোণে হাজার সপ্ন উঁকি দেয়, একে একে; বার বার ভীড় করে মত্ত আশা;
যখন সপ্নরা, ডানা ছড়িয়ে দেয় আকাশে,
যখন সম্ভাবনা হাতছানি দিয়ে ডাকতে থাকে…দূরে বহুদূরে; ঠিক গন্তব্যে।
আর তখনি…ঠিক তখনি হঠাত সব ধু ধু অন্ধকার
কোন বাহুল্য নয় কন্ঠে তাই আজ শুধুই চিতকার।
‘স্বাধীনতা’, এমন সাধীনতার কথা কেন বল বারবার?
যখন সপ্নময় চোখে একের পর এক গন্ডি পাড়ি দিয়ে শ্রেষ্ঠত্তের সপ্ন দেখে মন,
তখনি; ঠিক তখনি সব কিছু ধু ধু অন্ধকার;
তাই লাখো শহীদের দেহ নিংড়ানো রক্তে ভিজেও আমার মাটি পায়নি স্বাধীনতা
আজো আমি হাহাকার করি; দেখি না মায়ের মুখ,
কেননা আমার কাছে তো আলো নেই; আছে শুধুই সীমাহীন অন্ধকার
আজ তাই রক্ত ঢেলে যা পেয়েছি তা স্বাধীনতা নয়
শুধুই ভন্ড প্রতারক সার্থপর আর জুয়াচোর!
আজ যা পেয়েছি তা স্বাধীনতা নয়, শুধুই অভিশাপ,
শহীদের রক্ত সেদিনই আমাদের অভিশাপ দিয়েছে
যেদিন মর্যাদা ধুলোয় লুটায়ে জায়গা দিয়েছি পশুদের,
ঘৃণ্য রাজাকারের সঙ্গে করেছি আতাত
সেই অভিশাপই আজ আমাদের করছে আঘাত; পদে পদে।
কবিতার ভাষা লিখতে গিয়েও তাই আজ থমকে যাই;
আজ আমার যে পা বাধা
আমাকে করা হয়েছে শৃংখলিত,
তবু কবিতার ভাষাতেই গরজে উঠে বার বার
আমার রাইফেলের নিরভুল নিশানা;
বার বার; তারপর, আবার অন্যকারো।
কারণ যুদ্ধতো শেষ হয়নি।
সেই হৃদয় নিংড়ানো রক্তাক্ত স্বাধীনতা পাইনি এখনো
পেয়েছি একটি পবিত্র পতাকা; কিন্তু কি সম্মান রাখতে পেরেছি?
আমাকে ক্ষমা কর।
কেননা আজো ছাত্র রাজনীতের কড়াল থাবায় ঝড়াই আমি প্রাণ
রক্ত দেই তা স্পর্শ করেনা মাটি;
কারণ পশুদের বর্জ্যের মতন আমার রক্তের ঠিকানা আজ ম্যানহোল;
আজো আমার বোন ইয়াসমিন, রুমিরা প্রাণ দেয় দেশের বুকে শাস নেবার শক্তিটুকু না পেয়ে
বীরাঙ্গনা বোনদের পর ৪০ টি বছরে সহস্র বোন হয় জীবনযুদ্ধের বীরাঙ্গনা নিষিদ্ধ পল্লীতে;
আজো বাবার কোলে আমার মৃত্যু, আজো সত্যটা লেখার অপরাধে আমার ভাই টিপু পঙ্গু হয়ে যায়;
আজো ফেলানীরা ঝুলে থাকে সীমান্তে ঘন্টার পর ঘন্টা; কেউ এগোয় না
আজো ঘাতকের হাতে আমার মৃত্যু, আজো আমার মৃতদেহ পচে গলে মেশে ম্যানহোলে।
আর আমি পাইনা হদিস; আমার লাশের…
ততাকথিত বিদ্রোহের দেশপ্রেমী আমি নিরস্ত্র হয়ে মরি রক্ষক বাহিনীর হাতে;
আজো সেই ঘাতকেরা শাস্তিতে পায় জরিমানা।
না, না; এই শাস্তি আমি চাইনা কারণ এ তো প্রহষন;
আজ আমার শহীদ আত্মার ঘাতকদের বিচারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন?
কোন দেশে শুয়ে আমি! ‘স্বাধীনতা’? কাগুজে কথাতেই কি এর সীমা!
আজো কুকুর বেড়ালের মতন ঝড়ে আমার প্রাণ
না ভুল হল; পতঙ্গের মতন,
কুকুরের জন্যেও আশ্রয় থাকে;
আমার তো সেও নেই
বেড়ালের চোখের মতন নেই আলো
শুধুই সীমাহীন অন্ধকার;
যুদ্ধতো শেষ হয়নি;
আজো তাই নীতিহীন জুয়াচোরদের পকেট ভরতে নিজের সবটা দিয়ে দেই
সবটুকু; সম্মানের চেয়ে বড় দেবার আর কি আছে আমার??
যখন সপ্নালু চোখে সপ্ন নিয়ে দাড়াই আয়নায়
কি দেখি? কিছুই না;
নিকষ অন্ধকার
দেশ্টা এখন ২৫ এই আটকে গেছে ঘোষেনি স্বাধীনতা;
আসেনি স্বাধীনতা;
আর আমি বইয়ের পাতা খুলে বসে থাকি তার অপেক্ষায়।
না, কনো জান্তার জন্য নয়;
১৫ তিথীতে আমার কাছে আসবে বন্ধু চাঁদ, আলো নিয়ে;
আমার কাছেতো আলো নেই, শুধুই সীমাহীন অন্ধকার।

হঠাত কোথা থেকে ঝলকিত আলো;-আকাশে বিজলি চমক; আলোকবারতা নিয়ে এলো
কিন্তু এ কি? আমার বই আজ ভরে গেছে সস্তা সরস প্রেম গল্পে! এগুলোতে নেই বাস্তবতা।
তাই তো বার বার গরজে ওঠে এই কলম…।
কোনো পথে ছুটছে এরা, কি করছে আজ?
কোন উন্মাদনায় মেতেছে সবাই
জাতির হাস্ফাস!
একি? আমিতো স্বাধীনতা পাইনি
তাই বলে কেন এই নৈরাশ? আলোকে যে আসতেই হবে।
সেই আলোতে জ্ঞানকে অর্জন করতে হবে-এই আমাকে;
আমাতে-আলোতে মেলবন্ধন্ধন;
ধরতে হবে ওই মত্ত বিশশকে
চলতে হবে; এগুতে হবে;
কিন্তু, মেঘে ঢাকা ওই চাঁদের মতনই আমার জীবনে আজ অন্ধকার;
নিকষ অন্ধকার…
আর আজ আমার দেশ বিক্রি হয়ে গেছে; নতুন মোড়কে পরাধীনতা কিনেছি আমি,
আমার কাছে নেই খাবার, নেই পানি, নেই আলো;
কিছুই নেই; শুধু সপ্ন-
সপ্নতো দেখতেই হবে আমরা তো মানুষ!
মানুষই সপ্ন দেখে;
আর যারা টাকা দিয়ে সপ্ন বেচে; ওরা মানুষ না;
আমার সপ্ন আমার গ্যাস, আমার বিদ্যুত আমার সৃজনীশক্তি;
আমার শিক্ষা, দুর্নীতিহীন দেশ;

আমার স্বাধীনতা; যারা টাকায় আমার সপ্নগুলো বেচে দিল, আমার সপ্নগুলো কেড়ে নিল, তাদের বিরুদ্ধে লড়ব আমি,একাই;হয়তবা কিন্তু…
যুদ্ধতো এখনো শেষ হয়নি;
আমার সপ্নরা তাই ওদের ছাড়বে না,
অভিশাপ দেবে, প্রতিদিন সহস্রবার;
কিন্তু আমার পা যে বাধা;
সপ্ন নিয়ে আমি চলব কি করে?..
আমার সপ্নরাই আমায় শক্তি দেয়
দুর্বার তারুণ্য; কলম তাই আজো কথা বলে আমার হয়েআজো তাই মনে পড়ে কেউ একজন বিদ্রোহ করেছিল কবিতার ভাষায়
তাই আজ তোমারে স্মরি; গুরু তোমাকে সেলাম;
তোমার পায়েরই চলার পথের পথিক আমি- মেনে নিলাম শত অপমান;
বাকরুদ্ধ হলেও আমার কলম চলবেই
চলতে তাকে হবেই, সপ্নতো আমারি;
স্বপ্ন
কিন্তু আমার সপ্নের প্রেতাত্মারা তাদের ছাড়বে না…
প্রতিরাতে ওদের আলোকময় ঘরগুলোতে তাকিয়ে আমি নিরাশ হই,
আমার চোখে জল গড়িয়ে পরে,
আমি খুব্ধ হই, ধীক্কার দিই;
সপ্নকি শুধু ওদেরই জন্য?
এ কোন স্বাধীনতা?
যখন সাধীনভাবে কাজ করার জন্য আমার নেই আলো,
দুবেলা ভাতের সাথে খাবার জন্য নেই জল,
গ্যাস নেই, ঘর নেই, চিকিতসা নেই।আছে শুধু মৃত্যু…
হায়রে স্বাধীনতা!
মেকি ছলনাই দেখে যাব আমৃত্যু?
যখন আমার জীবনের নেই নিশ্চয়তা!
যখন শত্রু মিত্র সবাই আমার উপরে গুলি চালায়,
যখন শত্রুর ধরা রাইফেল দেখে মিত্র দাড়িয়ে হাসে
যখন আমার মৃত্যু হইয়ে যায় ‘সাধারণ ঘটনা’
দুষিত রাজনীতি কলঙ্কিত করে মহান রাস্ট্রকে;
আর আমি! চালের দাম বাড়তে দেখেই হাক ছেড়ে বাম হাতের কাজ সারি,
পথের মানুষদের দেখে থুতু ছিটাই; পরিবর্তন আর দেশ উদ্ধারের কথায় ফেনীল করি মুখ;
কিচ্ছু হবেনা বলে হাত পা গুটিয়ে পাকিস্তান-ভারতের খেলায় মেকী আনন্দের খোড়াক খুঁজি…
আর আহত মুক্তিযোদ্ধা আমার পায়ে ধরে ‘যোদ্ধা’ সম্মানটুকুর সীকৃতির মিনতি করে;
তখন আমি কি লিখতে পারি? কি বলতে পারি আর?
১৬ তুমি এখনো আসনি; ২৬ তোমাকে পালনের এর কোনো ভাষা দিতে পারিনা আমি;
কোনো উতসব নয় তোমার বন্ধকি পতাকার ঋণ সুদে আসলে বেড়েছে অনেক;
শুধুই হাহাকার,
পাইনি স্বাধীনতা…।
হে শহীদ! হে দেশপ্রেমী ৩০ লাখ বীর!
তোমরা রক্ত ঢেলেছ ভুল সময়ে,
সবই ব্যর্থ তোমরা উঠে এস, জেগে ওঠো, আর একবার
যুদ্ধতো শেষ হয়নি;
চাই আর একটা ২৬,চাই আর একটা মুক্তির সংগ্রাম
‘স্বাধীনতার’ ।